হাজার বছরের ঐতিহ্যকে দুই হাতে ধরে রাখা রাজকুমার দেবনাথের অনন্য সংগ্রাম
সিন্ধু সভ্যতা আমাদের সভ্যতার ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে তৈরি হওয়া সেই সভ্যতার মাটির পুতুল আজও আমাদের বিস্মিত করে। কিন্তু আধুনিক যান্ত্রিকতার যুগে এই শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই আমরা আজ আলোচনা করছি হাওড়ার শিল্পী রাজকুমার দেবনাথ-কে নিয়ে, যিনি একা হাতে সেই প্রাচীন শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তার নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় মাটি হয়ে ওঠে ইতিহাসের ক্যানভাস। তার কাজ শুধু পুতুল বানানো নয়, বরং আমাদের শিকড়কে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এই প্রবন্ধে জানব, তার সংগ্রাম, তার সাফল্য এবং এই শিল্পের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে।
মূল বিষয়:

- শৈশবের অনুপ্রেরণা ও শিল্পের শুরু
- মাটির পুতুলের গুরুত্ব ও ঐতিহ্য
- চ্যালেঞ্জ ও সংগ্রামের গল্প
- সাফল্য ও স্বীকৃতি
- আজকের যুগে এই শিল্পের প্রয়োজনীয়তা
মাটির পুতুলের গুরুত্ব ও ঐতিহ্য
সিন্ধু সভ্যতার পুতুলগুলো কেবল খেলনা নয় — সেগুলো সমাজের বিশ্বাস, আনন্দ, ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতীক। রাজকুমারের তৈরি পুতুলগুলো সেই প্রাচীনতার স্বাদ বহন করে। এই পুতুলগুলোর মধ্যে ইতিহাস ও শিকড়ের গন্ধ মিশে থাকে।

চ্যালেঞ্জ ও সংগ্রামের গল্প
এই যাত্রা কখনোই সহজ ছিল না। প্লাস্টিকের খেলনার ভিড়ে মাটির পুতুলের কদর কমে যায়। কাঁচামাল জোগাড়, আর্থিক অনটন ও মানুষের অবহেলা — সবকিছুর সঙ্গেই লড়াই করতে হয়েছে তাকে। তবুও হাল ছাড়েননি।
সাফল্য ও স্বীকৃতি
তার পুতুল আজ প্রদর্শিত হয়েছে দেশি-বিদেশি প্রদর্শনীতে। ছোটদের শেখানোর জন্য কর্মশালাও চালান তিনি। তার ছাত্রছাত্রীরাও এখন এই ঐতিহ্যকে বাঁচানোর কাজে নেমেছে। স্থানীয় সংবাদপত্রেও বহুবার তার কাজের প্রশংসা হয়েছে।
আজকের যুগে এই শিল্পের প্রয়োজনীয়তা কোথায়?
রাজকুমার দেবনাথ আমাদের মনে করিয়ে দেন যে, মাটি আমাদের মা, শিকড়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অটুট রাখা দরকার। আজকের প্রজন্মকে এই শিল্প শেখানো দরকার, যাতে তারা ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
রাজকুমার দেবনাথ কেবল একজন শিল্পী নন, বরং হাজার বছরের ঐতিহ্যকে দুই হাতে ধরে রাখা এক নিঃশব্দ সংগ্রামী। তার তৈরি প্রতিটি পুতুল যেন ইতিহাসের পৃষ্ঠা থেকে উঠে আসা এক গল্প। আমাদের উচিত তার মতো শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো এবং এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা।
ব্যবহারিকতা
- শিশুদের ঐতিহ্য সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া
- স্থানীয় অর্থনীতির বিকাশ
- মাটির পুতুলের মাধ্যমে ইতিহাসের পুনরুজ্জীবন
- পরিবেশবান্ধব খেলনার প্রসার
তথ্যসূত্র
- হরপ্পা-মহেঞ্জোদড়ো ও সিন্ধু সভ্যতা সম্পর্কিত প্রবন্ধসমূহ
- “Ancient Terracotta Toys of the Indus Valley Civilization” — Archaeological Survey of India
- হাওড়ার স্থানীয় শিল্প প্রদর্শনী ও মেলা-সংক্রান্ত প্রতিবেদন
- The wall Bright Bangla
সম্পাদনা, সাংবাদিকতা, এবং সৃজনশীল লেখায় প্রায়োগিক অভিজ্ঞতা নিয়ে অদিতি এক উদীয়মান সাহিত্যিক কণ্ঠ। বাংলা সাহিত্যের প্রতি অগাধ ভালোবাসা এবং সুগভীর প্রতিভার অধিকারী এক তরুণ লেখিকা। বাংলা সাহিত্যে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে, নিয়মিত বিভিন্ন পত্রিকা, ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল এবং সংকলনে তার লেখা প্রকাশ হয়েছে। তার লেখা একক বই এবং সম্পাদিত সংকলন কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় প্রকাশ পেয়েছে, তার “মৃত্যু মিছিল” বইটি পাঠকমহলে বেশ জনপ্রিয়। তার সৃষ্টিশীলতার প্রসার ঘটেছে আকাশবাণী এবং ফ্রেন্ডস এফএম-এ, যেখানে তার লেখা সম্প্রচারিত হয়েছে। অদিতির মতে, "বইয়ের থেকে পরম বন্ধু আর কেউ হয় না," এবং এই বিশ্বাস তাকে সাহিত্য জগতে প্রতিনিয়ত এগিয়ে নিয়ে চলেছে। বর্তমানে তিনি “বিশ্ব বাংলা হাব” -এ লেখক পদে কর্মরত।